ব্লকচেইন আসলে কীভাবে চলে? “পাশের ওয়াং চাচাকে ১০০ কয়েন পাঠানো” উদাহরণ দিয়ে ৫টা মারাত্মক সহজ স্টেপ, পড়লেই বুঝে যাবে:

১. পুরো নেটওয়ার্কে চিৎকার: কোনো মধ্যস্বত্বভোগী নেই, ডিমান্ড সরাসরি সিঙ্ক

ওয়াং চাচাকে ১০০ কয়েন পাঠাবে? ব্যাংকের কাছে হাতজোড় করতে হবে না, থার্ড পার্টির অনুমোদন অপেক্ষা করতে হবে না। শুধু ট্রান্সফার ইনফোটা পুরো নেটওয়ার্কে চেঁচে দে — বিশ্বের লাখ লাখ কম্পিউটার (নোড) একসাথে পেয়ে যায়। কেউ আটকাতে পারবে না, কেউ দেখেনি ভান করতে পারবে না। জিরো মধ্যস্বত্বভোগী।

২. সবাই মিলে চেক: কয়েক সেকেন্ডে পুরো নেটওয়ার্ক ভেরিফাই করে

নোডগুলো ট্রানজেকশন পাওয়ামাত্র সবাই ভেরিফিকেশন মোডে: সত্যি ১০০+ কয়েন আছে? ডাবল স্পেন্ড হয়নি তো? সিগনেচার তোমারই? কয়েক সেকেন্ডে হাজার হাজার কম্পিউটার একসাথে “পাস!” চেঁচিয়ে ট্রানজেকশন বৈধ ঘোষণা করে।

৩. মাইনাররা প্যাক করে: খাতায় লেখার অধিকার ছিনিয়ে নেওয়ার লড়াই — দুটো মূল পদ্ধতি

বিশেষজ্ঞ "মাইনার"রা এই মুহূর্তের সব ভেরিফাইড ট্রানজেকশন একটা "ডেটা প্যাকেট" (ব্লক)-এ ভরে, তারপর খাতায় লেখার অধিকার ছিনতাইয়ের জন্য লড়ে:

  • বিটকয়েন স্টাইল (PoW): কম্পিউটিং পাওয়ারের রেস — যে সবচেয়ে কঠিন ম্যাথ পাজল আগে সমাধান করে সে জিতবে। মানে “যে বেশি বিদ্যুৎ পোড়ায় সে জিতে”।
  • ইথেরিয়াম স্টাইল (PoS): পাওয়ার না, সম্পদ। যত বেশি কয়েন + যত দীর্ঘ সময় ধরে রাখো, লটারিতে তত বেশি চান্স — “ধনীরা বেশি টিকিট পায়”।

জিতে যাওয়া মাইনার তৎক্ষণাৎ ঘোষণা করে: “এই ব্লক আমি প্যাক করেছি, রিওয়ার্ড আমার!”

৪. চেইন লক: একক ফিঙ্গারপ্রিন্ট, বদলানো বা মুছে ফেলা অসম্ভব

বিজয়ী মাইনার নতুন ব্লকের জন্য একটা একক "ডিজিটাল ফিঙ্গারপ্রিন্ট" (হ্যাশ) তৈরি করে এবং আগের ব্লকের ফিঙ্গারপ্রিন্টও বসিয়ে দেয় — দুটো ব্লক এখন ইস্পাতের রিং-এর মতো চিরকালের জন্য জুড়ে গেল।

কোনো ব্লক ছেঁটে ফেলতে চাস? অসম্ভব। একটা অক্ষর বদলালেই ফিঙ্গারপ্রিন্ট ভেঙে যাবে, পুরো পরবর্তী চেইন ভেঙে পড়বে। পুরো নেটওয়ার্ক তৎক্ষণাৎ ধরে ফেলবে। পিছনের হাজার হাজার ব্লক আবার গড়তে হবে — টেকনিক্যালি অসম্ভব।

৫. পুরোপুরি পাবলিক: লাইভ লেজার, যে-কেউ চেক করতে পারে, কেউ মুখ ফিরিয়ে নিতে পারবে না

প্রথম "জেনেসিস ব্লক" থেকে এখন পর্যন্ত প্রতিটি ট্রানজেকশন স্ফটিকের মতো স্বচ্ছ: কে কাকে কত পাঠিয়েছে, ঠিক কতটা বেজে কত মিনিটে। যে-কেউ ব্লকচেইন এক্সপ্লোরার খুলে পুরো হিস্ট্রি উল্টে দেখতে পারে যেন পাবলিক সিসিটিভি ফুটেজ দেখছে।

এই রেকর্ড কখনো মুছে ফেলা বা বদলানো যাবে না। পাঠানোর লোকও না, গ্রহণকারীও না, থার্ড পার্টিও না — কেউই পিছু হটতে পারবে না।

এক লাইনে সারাংশ: ব্লকচেইন “ব্যাংকই ভরসা” কে বদলে দিয়েছে “গণিত + বিশ্বব্যাপী পাবলিক তত্ত্বাবধান”-এ। বিদ্যুৎ পোড়ানো (PoW) বা কয়েন লক (PoS) করে অচেনা লোকদেরকেও ট্রানজেকশন চেক করতে বাধ্য করে, আর লেজারটা চিরকালের জন্য পাবলিকলি পেরেক ঠুকে দেয় — ১০০% স্বচ্ছ এবং একদম অপরিবর্তনীয়।