ক্রিপ্টো ট্রেডিংয়ে সবে পা রেখেছেন, "T+0", "লিমিট ট্রেডিং", "টেক প্রফিট-স্টপ লস" এই নিয়ম ও শব্দগুলোতে মাথা ঘুরে যাওয়া স্বাভাবিক। আসলে ক্রিপ্টো ট্রেডিং ও স্টক ট্রেডিংয়ের মধ্যে অনেক মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। ট্রেডিংয়ের বৈশিষ্ট্য, লেনদেনের নীতি ও সাধারণ শব্দাবলী আয়ত্ত করা সুষ্ঠু অপারেশনের ভিত্তি। নিচে সহজ ভাষায় মূল জ্ঞানের পয়েন্টগুলো সাজিয়েছি, নতুনদের দ্রুত দক্ষতা অর্জনে সাহায্য করবে।

এক, ক্রিপ্টো ট্রেডিংয়ের পাঁচটি মূল বৈশিষ্ট্য

প্রচলিত স্টক ট্রেডিংয়ের তুলনায়, ভার্চুয়াল মুদ্রা ট্রেডিংয়ে স্পষ্ট পার্থক্য রয়েছে, মূল বৈশিষ্ট্যগুলো নিম্নরূপ:

  • ট্রেডিং সময়:সারা বছর ছুটি ছাড়া, ২৪ ঘণ্টা অবিরাম ট্রেডিং, কোনো খোলা-বন্ধের সময়সীমা নেই, যেকোনো সময় কেনা-বেচা করা যায়।

  • কোনো উত্থান-পতন সীমা নেই:স্টকের মতো ১০% বা ২০% উত্থান-পতনের সীমা নেই, ভার্চুয়াল মুদ্রার দামের কোনো উর্ধ্বসীমা নেই, স্বল্প সময়ে ব্যাপক বৃদ্ধি বা হ্রাস সম্ভব।

  • নিম্ন প্রবেশ সীমা:ট্রেডিং ইউনিট নমনীয়, সর্বনিম্ন 0.0001BTC কিনতে পারেন (প্ল্যাটফর্ম অনুযায়ী), স্টকের "সর্বনিম্ন ১০০ শেয়ার" কঠোর প্রয়োজন নেই, অল্প পুঁজিতেও অংশগ্রহণ করা যায়।

  • তাৎক্ষণিক ট্রেডিং (T+0):একই দিনে কেনা ভার্চুয়াল মুদ্রা একই দিনে বিক্রি করা যায়, স্টকের মতো পরের ট্রেডিং দিন অপেক্ষা করতে হয় না, পুঁজি ঘূর্ণায়মান দক্ষতা বেশি।

  • উচ্চ তারল্য:উত্তোলন ও নগদায়নে কোনো সময়সীমা নেই, প্ল্যাটফর্ম সমর্থন থাকলে যেকোনো সময় ভার্চুয়াল মুদ্রা বের করে ফিয়াটে বদল করা যায়, পুঁজির নমনীয়তা শক্তিশালী।

দুই, ট্রেডিং লেনদেনের তিনটি মূল নীতি

ভার্চুয়াল মুদ্রা ট্রেডিংয়ের লেনদেন যুক্তি প্রধানত দুই ধরনের অর্ডার ও একটি মূল নিয়মের উপর নির্ভর করে, নতুনদের এগুলো গুরুত্ব সহকারে আয়ত্ত করতে হবে:

1. লিমিট ট্রেডিং:নিজে মূল্য নির্ধারণ, লেনদেনের অপেক্ষা

বিনিয়োগকারী নিজের প্রত্যাশা অনুযায়ী বর্তমান বাজার মূল্যের চেয়ে কম ক্রয় মূল্য বা বেশি বিক্রয় মূল্য সেট করতে পারেন। বাজার মূল্য সেট মূল্যে পৌঁছালে সিস্টেম স্বয়ংক্রিয়ভাবে মিলিয়ে লেনদেন করে। সুবিধা হলো প্রত্যাশিত মূল্য লক করা যায়, অসুবিধা হলো সেট মূল্য বাজার থেকে অনেক দূরে হলে দীর্ঘ সময় লেনদেন নাও হতে পারে।

2. মার্কেট ট্রেডিং:তাৎক্ষণিক লেনদেন, বাজারের সাথে চলুন

কোনো নির্দিষ্ট মূল্য সেট না করে সরাসরি বর্তমান বাজারের রিয়েল-টাইম মূল্যে লেনদেন। সুবিধা হলো ট্রেডিং নির্দেশ দ্রুত কার্যকর হয়, "অর্ডার ঝুলে থাকার পর লেনদেন না হওয়া" পরিস্থিতি হয় না; অসুবিধা হলো অর্ডার দেওয়ার আগে সঠিক লেনদেন মূল্য জানা যায় না, বাজার অস্থির হলে প্রকৃত মূল্য প্রত্যাশা থেকে ভিন্ন হতে পারে, অনিশ্চয়তা থাকে।

3. লেনদেন অগ্রাধিকার:মূল্য অগ্রাধিকার, সময় অগ্রাধিকার

এটি সকল ট্রেডিংয়ের মূল নিয়ম:

  • ক্রয় করার সময়, যত বেশি বোলি মূল্য, তত তাড়াতাড়ি লেনদেন; বিক্রয় করার সময়, যত কম বোলি মূল্য, তত তাড়াতাড়ি লেনদেন (মূল্য অগ্রাধিকার)।

  • যদি একাধিক বিনিয়োগকারীর বোলি মূল্য একই হয়, যার অর্ডার আগে ঝুলেছে, তারটি আগে লেনদেন (সময় অগ্রাধিকার)।

তিন, ক্রিপ্টো ট্রেডিংয়ের প্রয়োজনীয় ২৭টি সাধারণ শব্দ (সহজ ব্যাখ্যা)

  1. পজিশন:প্রকৃত বিনিয়োগকৃত ভার্চুয়াল মুদ্রার মূল্য, মোট পুঁজির অনুপাতে (যেমন ৫০% পুঁজি দিয়ে কয়েন কেনা, ৫ চেং পজিশন)।

  2. ফুল পজিশন:সব উপলব্ধ পুঁজি একবারে সম্পূর্ণ ভার্চুয়াল মুদ্রা কেনা, উচ্চ ঝুঁকির অপারেশন।

  3. পজিশন কমানো:ধারণকৃত কিছু ভার্চুয়াল মুদ্রা বিক্রি করা, সম্পূর্ণ নয়, বাকি পজিশন রাখা।

  4. হেভি পজিশন:ধারণকৃত ভার্চুয়াল মুদ্রার মূল্য মোট পুঁজির অনুপাতে খুব বেশি (যেমন ৮০% এর বেশি পুঁজি দিয়ে কয়েন)।

  5. লাইট পজিশন:ধারণকৃত ভার্চুয়াল মুদ্রার মূল্য অনুপাত কম, বেশিরভাগ পুঁজি উপলব্ধ (যেমন ২০% পুঁজি দিয়ে কয়েন)।

  6. নো পজিশন:সব ভার্চুয়াল মুদ্রা বিক্রি করে সম্পূর্ণ পুঁজি নগদে রূপান্তর, কোনো ধারণ নেই।

  7. টেক প্রফিট:পূর্বনির্ধারিত লাভের লক্ষ্যে পৌঁছে বিক্রি করা, প্রাপ্ত লাভ লক করা, পরবর্তী মূল্য হ্রাসে লাভ কমে যাওয়া রোধ করা।

  8. স্টপ লস:ক্ষতি পূর্বনির্ধারিত মাত্রায় পৌঁছে তৎক্ষণাৎ বিক্রি, আরও ক্ষতি বাড়তে বাধা (যেমন ১০% ক্ষতিতে বিক্রি)।

  9. বুল মার্কেট:বাজারের সামগ্রিক মূল্য অবিরাম বৃদ্ধি, বিনিয়োগকারী মনোভাব আশাবাদী, উপার্জন প্রভাব স্পষ্ট।

  10. বেয়ার মার্কেট:বাজারের সামগ্রিক মূল্য অবিরাম হ্রাস, বিনিয়োগকারী মনোভাব হতাশ, অধিকাংশ ক্ষতিতে।

  11. লং (ডুয়িং লং):কয়েন মূল্য ভবিষ্যতে বাড়বে বলে মনে করে আগে কেনা, মূল্য বাড়লে উঁচুতে বিক্রি করে লাভ।

  12. শর্ট (ডুয়িং শর্ট):কয়েন মূল্য ভবিষ্যতে কমবে বলে মনে করে আগে ধারণকৃত কয়েন বিক্রি (বা প্ল্যাটফর্ম থেকে ধার নিয়ে বিক্রি), মূল্য কমলে কমে কিনে পার্থক্য উপার্জন।

  13. পজিশন তৈরি:প্রথমবার ভার্চুয়াল মুদ্রা কেনা, একটি ট্রেড শুরু।

  14. অ্যাড পজিশন:একই কয়েন ব্যাচে কেনা, যেমন আগে ১BTC, পরে আরও ১BTC যোগ, গড় ধারণ খরচ কমানো।

  15. রিবাউন্ড:কয়েন মূল্য অবিরাম কমার পর, খুব দ্রুত কমার কারণে স্বল্পমেয়াদী মূল্য ফিরে আসা, সমন্বয় চলা।

  16. সাইডওয়েজ (হরাইজন্টাল):কয়েন মূল্যের ওঠানামা খুব কম, দীর্ঘ সময় একটি রেঞ্জে দোলা, কোনো স্পষ্ট উপরে-নিচে প্রবণতা নেই।

  17. গ্র্যাজুয়াল ড্রপ:কয়েন মূল্যে বড় ঝাঁপ নেই, ধীরে ধীরে অবিরাম নিচে, ক্ষতি ধীরে জমা।

  18. ডাইভ (ওয়াটারফল):কয়েন মূল্য স্বল্প সময়ে দ্রুত ব্যাপক পতন, বড় হ্রাস, বাজারে ভয়ের পরিবেশ।

  19. কাট লস:কেনার পর মূল্য কমা, বা শর্ট করার পর মূল্য বাড়া, বড় ক্ষতি এড়াতে বাধ্য হয়ে লোকসানে বিক্রি (বা কেনা)।

  20. ট্র্যাপড:মূল্য বাড়বে ভেবে কেনার পর মূল্য কমা; বা মূল্য কমবে ভেবে বিক্রির পর মূল্য বাড়া, ধারণ ক্ষতিতে আটকে যাওয়া।

  21. আনট্র্যাপ:কেনার পর মূল্য কমে ক্ষতি, পরে মূল্য ফিরে এসে ক্ষতি থেকে লাভে রূপান্তর, ক্ষতি থেকে মুক্তি।

  22. মিস দ্য বুল:বাজার কম আঁকার পর বিক্রি, মূল্য অবিরাম বাড়া, সময়মতো ফিরে না কিনে লাভের সুযোগ হাতছাড়া।

  23. ওভারবট:কয়েন মূল্য অবিরাম উঁচুতে, ক্রয় শক্তি শেষ, পরে পতনের সম্ভাবনা বেশি।

  24. ওভারসোল্ড:কয়েন মূল্য অবিরাম নিচে, বিক্রয় শক্তি শেষ, পরে ফিরে আসার সম্ভাবনা বেশি।

  25. ট্র্যাপ বুলস:কয়েন মূল্য দীর্ঘ সময় সাইডওয়েজ, পতনের সম্ভাবনা বেশি, শর্ট অনেক বিক্রি করেছে, এ সময় শর্ট হঠাৎ মূল্য উপরে টেনে লংকে প্রলুব্ধ করা, তারপর চাপ দিয়ে লংকে ট্র্যাপ করা।

  26. ট্র্যাপ বেয়ার্স:লং কেনার পর ইচ্ছাকৃত মূল্য চাপানো, শর্ট ভাবে মূল্য আরও কমবে তাই বিক্রি শুরু, শেষে শর্ট লংয়ের ফাঁদে পড়ে বৃদ্ধির লাভ হাতছাড়া করে।